শুক্রবার (২ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচিতে সারা দেশে সহিংসতা, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন।
জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্ট এলাকা ঘুরে শাহবাগ পর্যন্ত যান। শাহবাগে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তারা প্রেস ক্লাবে পৌঁছান, যেখানে প্রায় তিন হাজার মানুষের জমায়েত হয়। প্রেস ক্লাব থেকে শিক্ষা ভবনের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের দিকে যান তারা। সেখানে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, যা পুরো প্রাঙ্গন মুখরিত করে তোলে।
হবিগঞ্জে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে মোস্তাক মিয়া (২৪) নামে একজন শ্রমিক নিহত হন। বিকালে শহরের কেন্দ্রীয় এলাকায় এ সংঘর্ষ ঘটে। মোস্তাক মিয়ার সহকর্মী মারুফ হোসেন জানান, মোস্তাক জুতা কিনতে এসে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিতে নিহত হন।
উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে মাইলস্টোন কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে একজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
লালমনিরহাটে মহাসড়কে প্রজেক্টর বসিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন। ভিডিও প্রদর্শনের আগে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়।
গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পী ও নাগরিক সমাজের ব্যানারে বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। তারা সরকারের পদত্যাগসহ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।
চিকিৎসকদের একাংশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃষ্টিতে ভিজে সমাবেশ করেন। তারা শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে কোটা আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় বিচার দাবি করেন।
শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ ও গণমিছিল দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ও সহিংসতার সৃষ্টি করেছে। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।